Thursday, July 15, 2010

ওবায়েদ আকাশের কবিতা















ধীরেন্দ্র আর ভুশার নস্টালজিয়া



‘ধিরে, সুখ নাই।’

[ভুশার একমাত্র ঘোড়াটি গতরাতে চুরি হয়ে গেছে।
কিংবা ধারণা করা যায়, এ মুষল বৃষ্টিতে ঘোড়াটির
দুরন্ত শৈশবের কথা মনে পড়ে যায়।]

‘কেন?’ --বলল ধীরেন্দ্র।

আবার ধীরেন্দ্র কয়, ‘তোর থেকে ত্রি-দন্ত চতুর কেউ
একজন ঘোড়াটির আজকাল খোঁজখবর নেয়।’

‘ধিরে, এখন কী করি?’

‘যত দূর জানা আছে, তার কিছু তথ্য বের করি।’

[তথ্যে বেরিয়ে পড়ে, এ ভরা শ্রাবণে, তিনিও ঘোড়ায়
চেপে হঠাৎই ছুটছেন নাকি সোমত্ত কৈশোরের দিনে।]

‘মাঝি, কোন ঘাটে ভিড়বে তোমার তরী?’

[নদীতীরে ধীরেন্দ্র আর ভুশা, তাদেরও শৈশবের দু’টি
টিকিট যদি মেলে!]


মাঝি বলে, ‘আপনারা ব্যাটা নাকি ছেলে?’

এ ওর দিকে চায়, তারপর ধীরেন্দ্র বলে--‘মুশকিলে
ভুশা, মাঝিও মনের কথা রঙ ধরিয়ে বলে।’



মুখর এলাহি কাল

একবার যখন ভালবাসতে শিখেছ, তেমাথার মোড়ে গাছগাছালির ভিড়ে নিঝুম বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে পড়ে দেখ-- ভালবাসা কেন বারবার বৃষ্টিতে ভিজে উঠতে চায়। থৈ থৈ বর্ষাকাল এলে চারিদিকে ভালবাসার চাষবাস যেমন বাড়ে, কণ্ঠে বিরহ তুলে কত নাইওর গ্রাম ছেড়ে ভিন গাঁয়ে যায়-- কত ঋষি কামার্ত হয় ভিজে!

পৌষ-মাঘে বৃষ্টি হলে তোমার আমার ভালবাসার দুর্ভোগ নেমে আসে-- যেভাবে আষাঢ়ে-শ্রাবণে-- তুমি আমি ফিরে পাই ছেলেবেলার স্মৃতি-- মুখর বর্ষণে। প্রতিদিন তোমার প্রতীক্ষায় যেমন থাকি, তেমনি অঝর বর্ষণের লোভে হাটুরের দলে ভিড়ে নদীর কিনারে বসে এটাওটা বিকিকিনি করি-- মাছবাজারে ঘুরি, বৃষ্টিতে লাফিয়ে-ওঠা খালুই ভর্তি মাছ কিনে ঘরে ফিরে অসি। যেহেতু আমার ভেতরে--পৃথিবীর তাবত বর্ষা মানেই দুর্দান্ত ছেলেবেলা, গাঁয়ের স্কুলমাঠে থৈ থৈ জলে ফুটবল নিয়ে খেলা। আজো অব্দি ভালবাসা মানেই যেমন বৃষ্টি বৃষ্টি এবং বৃষ্টি-- অন্যত্র বর্ষাকাল মানেই গুড়– গুড়– মেঘের গর্জনে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়ানো-- মুখর এলাহি কাল


* কবি পরিচিতি
ওবায়েদ আকাশ : কবি, সম্পাদক--শালুক ও সাময়িকী বিভাগ, দৈনিক সংবাদ। জন্ম ১৯৭৩।

No comments:

Post a Comment